শিক্ষা স্বাস্থ্য ও প্রযুক্তি সমন্বয়ে হব বিশ্বশক্তি
সততা
সৃজনশীলতা
নেতৃত্ব
News Update :
লাইব্রেরী
মানবসভ্যতার ক্রমবিকাশে লাইব্রেরীর ভূমিকা অপরিসীম। জ্ঞান-বিজ্ঞানের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে লাইব্রেরীর জনপ্রিয়তাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। লাইব্রেরীতে সংরক্ষিত থাকে হাজার বছরের ইতিহাস-ঐতিহ্য, শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতির জ্ঞান। মানুষের কাছে তাই লাইব্রেরী এক জ্ঞানতীর্থ, যেখানে মুক্তির সন্ধান পাওয়া যায়। পাওয়া যায় জীবনের আলোকিত পথ।
সামছউদ্দীন-নাহার শিক্ষা ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রের অধীনে পরিচালিত “উদ্দীপন বদর-সামছু বিদ্যানিকেতন” এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো “জিনাত আরা রফিক লাইব্রেরি।” এই লাইব্রেরির নামকরণ করা হয়েছে প্রখ্যাত ব্যক্তিত্ব মোহাম্মদ রফিক এর সহধর্মীনী জিনাত আরা রফিকের স্মরণে। লাইব্রেরিটি বর্তমানে অন্তত ৩৫০০টি বই ধারণ করে, যা নিয়মিতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটি একটি সুবিন্যস্ত লাইব্রেরি, যা মানুষের মনের পছন্দমাফিক রসদের সন্ধান দিতে সক্ষম।
লাইব্রেরির কার্যক্রমের একটি বিশেষ দিক হলো এটি বিভিন্ন কর্ণারে ভাগ করা হয়েছে, যা পাঠকদের বিভিন্ন আগ্রহের প্রতি মনোযোগ দেয়। উল্লেখযোগ্য কর্ণারগুলো হলো:
মুক্তিযুদ্ধ কর্ণার: এখানে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও বিষয়বস্তু নিয়ে বিভিন্ন বই রয়েছে, যা নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন করে।
বাংলা সাহিত্য কর্ণার: বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন রচনার সংকলন, কবিতা, উপন্যাস ও নাটক এখানে পাওয়া যায়, যা বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহী পাঠকদের জন্য বিশেষ আকর্ষণীয়।
বিজ্ঞান ও গণিত কর্ণার: বিজ্ঞান ও গণিতের বিভিন্ন বিষয়বস্তু নিয়ে বইয়ের সমাহার, যা শিক্ষার্থীদের বৈজ্ঞানিক চিন্তাভাবনা ও গণিতের প্রতি আগ্রহী করে তোলে।
ইংরেজি কর্ণার: ইংরেজি ভাষার বিভিন্ন বই, সাহিত্য ও শিক্ষামূলক উপকরণ, যা ভাষা শিক্ষার জন্য সহায়ক।
শিশু কর্ণার: শিশুদের জন্য উপযোগী বই ও গল্পের সংকলন, যা তাদের কল্পনা ও সৃজনশীলতা বিকাশে সহায়তা করে।
লাইব্রেরির বিশেষত্ব ও আকর্ষণ হিসেবে “কবি রফিক কর্ণার” এবং “বাগেরহাট কর্ণার” উল্লেখযোগ্য। এই কর্ণারগুলো ইতিমধ্যে পাঠকমহলে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এছাড়াও, লাইব্রেরিতে দৈনিক পত্রিকা (বাংলা ও ইংরেজি) ও অন্যান্য সাময়িকী পাঠের বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের সমসাময়িক ঘটনা সম্পর্কে ওয়াকিবহল রাখে।
লাইব্রেরি থেকে নিয়মিতভাবে ছাত্র-ছাত্রীরা বই নেয় এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা জমা দেয়। তারা এখানে দৈনিক পত্রিকা পড়ার মাধ্যমে বর্তমান বিশ্বের খবরাখবর জানার সুযোগ পায়। লাইব্রেরিতে একজন দক্ষ লাইব্রেরিয়ান রয়েছেন, যিনি বইয়ের তালিকা তৈরি করা, বই সংগ্রহ, বিশেষ ক্রম অনুযায়ী সেগুলো সাজানো, নতুন জার্নাল বা বই কেনা এবং কর্মশালা পরিচালনা ইত্যাদি কাজ করেন।
বই পড়ার মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীরা নতুন জিনিস, নতুন তথ্য এবং সমস্যার সমাধান করার নতুন উপায় খুঁজে পায়। আমরা নিয়মিতভাবে লাইব্রেরি ব্যবহার করার জন্য আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদের অনুপ্রাণিত করি। লাইব্রেরিতে নীরবতা বজায় রাখা কাম্য, যাতে সবাই শান্তিপূর্ণভাবে বই পড়তে পারে। ছাত্র-ছাত্রীরা অবসরে লাইব্রেরিতে এসে বই পড়ে এবং নিজেদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি করে।
এই লাইব্রেরি কেবল একটি বইয়ের সংগ্রহ নয়, বরং এটি একটি জ্ঞানভাণ্ডার, যা শিক্ষার্থীদের চিন্তাভাবনা ও সৃজনশীলতা বিকাশে সহায়তা করে। আমরা লাইব্রেরীর জন্য আদর্শ পরিবেশ তৈরিতে সর্বদা স্বচেষ্ট, যেখানে শিক্ষার্থীরা নিজেদেরকে নতুন জ্ঞানের সাথে পরিচিত করতে পারে এবং তাদের ভবিষ্যৎ গড়ার পথে একটি শক্তিশালী ভিত্তি স্থাপন করতে পারে।